২৬ বছর পর অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য ন্যায়বিচার দিলো হাইকোর্টের রায়, ১৭০০ শূন্যপদে শীঘ্রই নিয়োগ

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে চলা আইসিডিএস সুপারভাইজার নিয়োগ প্রক্রিয়া অবশেষে একটি সমাধানে পৌঁছেছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চের নেতৃত্বে কলকাতা হাইকোর্ট আইসিডিএস কর্মীদের নিয়োগ ৫০-৫০ অনুপাতে করার নির্দেশ দিয়েছে, যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় স্বস্তি এনেছে। এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত প্রায় ১,৭০০ শূন্যপদে নিয়োগের পথ প্রশস্ত করেছে, যা উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রার্থীদের দীর্ঘ অপেক্ষা এবং অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়েছে।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে স্থগিত নিয়োগ

শেষবার আইসিডিএস সুপারভাইজার পদ পূরণ করা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। ২১ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানের পর, অবশেষে ২০১৯ সালে ৩,৪৫৮ টি শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তবে, কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নিয়োগ নির্দেশিকা বাস্তবায়নে অসঙ্গতির কারণে জটিলতা দেখা দেয়।

২০১৫ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা এবং এর লঙ্ঘন

২০১৫ সালে, কেন্দ্রীয় সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে যেখানে বলা হয়েছিল যে আইসিডিএস সুপারভাইজার পদের ৫০% অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে, বাকি ৫০% সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা যেতে পারে।

এই স্পষ্ট নির্দেশিকা সত্ত্বেও, রাজ্য সরকার মাত্র ৪২২ টি শূন্যপদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য সংরক্ষণ করেছে এবং সরাসরি ৩,০৩৬ জন প্রার্থী নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। এই পদক্ষেপকে বৈষম্যমূলক হিসেবে দেখা হয়েছিল, যার ফলে বেশ কয়েকজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আদালতে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে বাধ্য হন।

আরও পড়ুন:- পশ্চিমবঙ্গে ১৫০০ কোটি টাকার রাবার পার্ক, ১০ হাজার টিরও বেশি চাকরির সুযোগ আনতে চলেছে

আইনি লড়াই এবং আদালতের রায়

২০১৯ সালে, ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা কলকাতা হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেছিলেন। ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে, বিচারপতি লপিতা ব্যানার্জি রায় দেন যে ৫০% শূন্যপদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। তবে, রাজ্য সরকার এই রায়কে উপেক্ষা করে সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

২০২৪ সালে, বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা মামলাটি আবার শুনানি করেন। আবেদনকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরা জোর দিয়ে বলেন যে কেন্দ্রীয় নির্দেশ অবশ্যই অনুসরণ করা উচিত। বিচারপতি মান্থা পূর্ববর্তী রায় বহাল রেখে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপকে অবৈধ ঘোষণা করেন। তিনি আদেশ দেন যে ৩,৪৫৮ টি শূন্যপদে ১,৭২৯ টি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দ্বারা পূরণ করতে হবে।

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একটি বড় জয়

এই রায়কে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য একটি বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যারা বছরের পর বছর ধরে তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করে আসছিলেন। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে রাজ্য সরকার যদি এখন এই আদেশ অনুসরণ করে, তাহলে দীর্ঘদিন ধরে বিলম্বিত নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে, যার ফলে হাজার হাজার প্রার্থী উপকৃত হবেন।

হাইকোর্টের রায় কার্যকর হওয়ার পর, সকলের নজর রাজ্য সরকারের উপর, কত দ্রুত তারা এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে তা দেখার জন্য। ১,৭০০ টি শূন্যপদ নিয়োগ শীঘ্রই চূড়ান্ত করা হতে পারে, যা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করবে এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের তাদের ন্যায্য পদোন্নতি নিশ্চিত করবে।

1 thought on “২৬ বছর পর অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য ন্যায়বিচার দিলো হাইকোর্টের রায়, ১৭০০ শূন্যপদে শীঘ্রই নিয়োগ”

Leave a Comment