বার্ষিক ৮.২% সুদে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সরকারি স্কিম, স্কিমের সুবিধা ও বিস্তারিত তথ্য জানুন

সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিম (এসসিএসএস) প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি নিরাপদ এবং লাভজনক বিনিয়োগের বিকল্প। এই স্কিমের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত রিটার্ন পেতে পারেন, যা প্রতি ত্রৈমাসিকে তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এই স্কিমে বার্ষিক ৮.২% সুদের হার রয়েছে, যা প্রবীণ নাগরিকদের জন্য নিয়মিত আয়ের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই স্কিমের বিস্তারিত এবং কীভাবে এটি থেকে মাসিক আয়ের ব্যবস্থা করা যায়।

সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিমের বৈশিষ্ট্য

সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিম একটি সরকারি সঞ্চয় প্রকল্প, যা প্রবীণ নাগরিকদের জন্য নিরাপদ এবং স্থিতিশীল রিটার্ন প্রদান করে। এই স্কিমে বিনিয়োগ সরকার দ্বারা গ্যারান্টিযুক্ত, তাই এতে কোনো ঝুঁকি নেই। পোস্ট অফিস ছাড়াও, অনুমোদিত ব্যাঙ্কগুলিতে এই স্কিমের অধীনে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

বিনিয়োগের সময়কাল

এই স্কিমে বিনিয়োগের সময়কাল ৫ বছর। তবে, মেয়াদ শেষে আরও ৩ বছরের জন্য স্কিমটি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন:- ই-শ্রম কার্ডের সুবিধা ও আবেদন পদ্ধতি জেনে নিন সবকিছু ! মাসিক পেনশন ও দুর্ঘটনা বীমার সুবিধা পান কার্ডের মাধ্যমে

সুদের হার

এই স্কিমে বার্ষিক ৮.২% সুদ প্রদান করা হয়, যা প্রতি ৩ মাস অন্তর বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে জমা হয়।

বিনিয়োগের পরিমাণ

  • সর্বনিম্ন বিনিয়োগ: ১,০০০ টাকা
  • সর্বোচ্চ বিনিয়োগ: ৩০ লক্ষ টাকা (একক অ্যাকাউন্টে)

কর সুবিধা

এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে আয়কর আইনের ধারা ৮০সি-এর অধীনে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় পাওয়া যায়।

যোগ্যতা

  • ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী যেকোনো প্রবীণ নাগরিক এই স্কিমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
  • ৫৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী সরকারি কর্মচারী, যারা স্বেচ্ছায় অবসর প্রকল্প (ভিআরএস) এর অধীনে অবসর নিয়েছেন, তারাও এই স্কিমের সুবিধা নিতে পারেন।
  • ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী অবসরপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা কর্মীরাও এই স্কিমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, তবে অবসর সুবিধা পাওয়ার ১ মাসের মধ্যে বিনিয়োগ করতে হবে।
  • নন-রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ানরা (এনআরআই) এই স্কিমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না।

অ্যাকাউন্ট সংখ্যা এবং বিনিয়োগ সীমা

  • একজন ব্যক্তি একটি অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন।
  • স্বামী-স্ত্রী যৌথ অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা যায়।
  • যদি স্বামী-স্ত্রী আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলেন, তাহলে উভয়েই সর্বোচ্চ ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবেন।

প্রতি মাসে আয়ের হিসাব

এই স্কিমে সুদ প্রতি ত্রৈমাসিকে প্রদান করা হয়। তবে, যদি কেউ মাসিক আয়ের ব্যবস্থা করতে চান, তাহলে ত্রৈমাসিক সুদকে মাসিক আয় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে বার্ষিক সুদ হবে ৮২,০০০ টাকা (১০ লক্ষ টাকার ৮.২%)। প্রতি মাসে গড়ে ৬,৮৩৩ টাকা আয় করা যাবে।

সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিমের সুবিধা

  • সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত নিরাপদ বিনিয়োগ।
  • উচ্চ সুদের হার (৮.২% বার্ষিক)।
  • কর ছাড়ের সুবিধা।
  • নিয়মিত আয়ের উৎস।
  • দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সুযোগ।

সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিম প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি চমৎকার বিনিয়োগের বিকল্প। এটি নিরাপদ, লাভজনক এবং নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করে। যদি আপনি বা আপনার পরিবারের কোনো সদস্য এই স্কিমের যোগ্য হন, তাহলে এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন।

এই স্কিম সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আপনার নিকটস্থ পোস্ট অফিস বা অনুমোদিত ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করুন।

Sudipta: সুদীপ্ত নাগা, এ টু জেড রিপোর্ট এর কো-ফাউন্ডার এবং কনটেন্ট রাইটার। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনারা পশ্চিমবঙ্গের চাকরির খবর এবং সরকারি যোজনা সম্বন্ধে নানান গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন।